ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের (ডিজি) বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, একজন চিকিৎসক এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে জনগণের মধ্যে ভীতি ছড়ানোর অধিকার তার নেই। বরং চিকিৎসক হিসেবে মানুষকে অভয়বাণী শোনানোই তার দায়িত্ব ছিল।
শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনলাইন ব্রিফিংয়ে রিজভী এসব কথা বলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এক, দুই বা তিন মাসে শেষ হবে না। এটি দুই থেকে তিন বছর ধরে চলতে পারে, যদিও সংক্রমণের মাত্রা একই হারে নাও থাকতে পারে।
পরদিন শুক্রবার ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজির বক্তব্যকে দায়িত্ব ও কাণ্ডজ্ঞানহীন বলে মন্তব্য করেন।
যদিও ওই বক্তব্যের জন্য পরে দুঃখ প্রকাশ করেন অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ।
রিজভী বলেন, সরকারি হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে সিএমএইচে দুই-তিন সপ্তাহ করোনা চিকিৎসা শেষে ডা. আবুল কালাম আজাদ দেশে আতঙ্ক ছড়ানোর এই তত্ত্ব কোথায় পেলেন? ভবিষ্যদ্বাণী দিতে গেলেও এর সঙ্গে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্তের উল্লেখ থাকতে হয়। কিন্তু তিনি তা করেননি।
এমন খেলো কথাবার্তা কি এই সময়ে ডিজি সাহেবের মানায়? করোনা চিকিৎসায় সুচিকিৎসা, মানুষকে সচেতন করা ও প্রকৃত সত্য তুলে ধরার গুরুত্বপূর্ণ কাজটি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের। কিন্তু মহামারীর সময় দুনিয়াজুড়ে সবাই যেখানে আজকের পরিস্থিতি আজকেই সামাল দেয়া নিয়ে ব্যস্ত সেখানে ডিজি আছেন দুই তিন বছরের চিন্তায়!
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, বর্তমানে সবচাইতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন ডাক্তার, সাংবাদিক, পুলিশসহ যারা করোনা মোকাবেলার সঙ্গে যুক্ত আছেন। অথচ তাদের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর বিশেষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
তিনি বলেন, অসুস্থ মানুষের এখন করোনা টেস্টের জন্যে রাত কাটে রাস্তায়! সরকারের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রধান আমলা হচ্ছেন ডিজি, দেশের সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থার কথা নাই বা বললাম, বর্তমানে করোনার যে ঝড় বইছে তাতে বিপর্যস্ত চিকিৎসা ব্যবস্থার রুগ্নদশাটাই এখন সবার চোখের ওপর ভাসছে।
প্রতিদিনই জনসম্মুখে করোনার নমুনা সংগ্রহ পরীক্ষার যে দৈন্যদশা দেখা যাচ্ছে সেদিকে ডিজি সাহেবের ভ্রুক্ষেপ নেই, অথচ জনগণকে করোনা নিয়ে আরও ভয়ংকর ভীতির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছেন।
রিজভী বলেন, টেস্ট করাতে গিয়ে অনেক সুস্থ ভালো লোকও আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন, মারা যাচ্ছেন। যারা করোনা আক্রান্ত হননি তাদের অনেকেরই নমুনা পরীক্ষায় আসছে পজিটিভ। আবার যারা করোনায় আক্রান্ত তাদের আসছে নেগেটিভ। এভাবে করোনার নমুনা পরীক্ষায় এতো ভুল ফলাফল আসছে যে, অন্য কোনো দেশ হলে ডিজি পদত্যাগ করতেন।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেশের জনগণ ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে আর কোনো চটুল বক্তব্য মন্তব্য শুনতে রাজি নয়। পরিস্থিতি সামাল না দিতে পেরে অবান্তর কথা, অন্যের ওপর দোষারোপ করে নিজেদের অজ্ঞতা-অযোগ্যতাকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন
ক্ষমতাসীনরা।
জনগণ ক্ষমতাসীনদের অজ্ঞতা-অযোগ্যতার বলি হতে পারে না। প্রতিদিনই যেখানে ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে জনজীবন আচ্ছন্ন হয়ে আছে, সেখানে বাকোয়াস কথা মানুষ শুনতে চায় না।