শাহ সুহেল আহমদ, ফ্রান্স (প্যারিস) থেকে:
লকডাউন তুলে নেয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে ফ্রান্স। ধাপে ধাপে শর্তারোপ করে কঠোর নজরদারি করারও ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। লকডাউন তুলার পর কোনো অবস্থাতেই যেন আবার আগের অবস্থায় ফিরে না যায় এজন্য পরিবহণ সেক্টরকে সর্বোচ্চ নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বুঝাতে ফ্রান্সকে রেড জোন ও গ্রীণ জোনে ভাগ করা হয়েছে। গ্রীণ জোন তুলনামূলক ভাল অবস্থানে থাকলেও রেড জোন এখনও ডেঞ্জার জোনেই আছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যাডওয়ার্ড ফিলিপ। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস এখনও রেড জোনেই অবস্থান করছে। আশঙ্কার বিষয় হলো, ফ্রান্সে বসবাসরত সিংহভাগ বাংলাদেশীই প্যারিসে বসবাস করেন।
লকডাউন তুলে নেয়া হলেও পরবর্তি ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত পিক আওয়ার তথা সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৯টা এবং বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত শুধুমাত্র কর্মজীবীরা গণপরিবহণ ব্যবহার করতে পারবেন। তবে সাথে অবশ্যই কাজের প্রমাণপত্র রাখতে হবে। এ সময় অফিসগামী কিংবা কাজহীন কোনো যাত্রী পরিবহণে উঠতে পারবেন না। এছাড়া বাসা থেকে বের হতে হলে অবশ্যই প্রত্যেককে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ইতোমধ্যে প্যারিসসহ একাধিক শহরে ফ্রী মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। এই দুটির কোনো একটির ব্যত্যয় হলে ১৩৫ ইউরো জরিমানা গুণতে হবে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত ফ্রান্সে ৩০২টি মেট্রো রেল স্টেশনের মধ্যে ৬০টি বন্ধ থাকবে। প্যারিসের একাধিক রেল স্টেশন ঘুরে দেখে গেছে- কোনো রেল স্টেশনেই আগের মতো অবাধ বসার ব্যবস্থা রাখা হয় নি। যাত্রীরা এখন থেকে দাঁড়াতেও পারবেন না আগের মতো। মেট্রো ট্রেনে যাত্রী বসার সীটে বেশ সংযোজন বিয়োজন করা হয়েছে। চাইলেই সকল সীটে যাত্রী বসতে পারবেন না। মুখোমুখি সীট থেকে একটি সীটকে ক্রস চিহ্ন দিয়ে অপরটিতে বসার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক বলেছেন, ‘আমরা এখনও খারাপ অবস্থায় আছি। লকডাউন তুলে নেবার মুহুর্তে এসেও বলতে হয়, ভাইরাসের এই চাপের মধ্যে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়ার প্রশ্নই আসে না।’