ইউকে শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
হেডলাইন

জাফর উল্লাহ চৌধুরী গণভবনে ঘুষের টাকা পাঠিয়ে দেন, অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানী থেকে ‘ঘড়ি কাদের স্যার’ এর “করোনার চেয়ে আমরা শক্তিশালী“ কথাটি অনেক মজবুত

◻️রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী◻️

পুরো দুনিয়া জুড়ে একই কথা একই আওয়াজ করোনা ভাইরাস। সবাই হিমশিম খাচ্ছে। যাদের ডায়বেটিক্স ডাক্তাররা উপদেশ দিচ্ছেন এই মুহুর্তে রোজা না রাখতে। বাঙালীদের মধ্যে প্রচুর লোক রয়েছেন যারা সারা জীবন পাপ করেছেন, এখন শেষ বয়সে এসে মনে করেন সব ইবাদতী তিনি করে ফেলবেন এবং আগামীকাল মরে গেলে পরশু তিনি সরাসারি জান্নাতে প্রবেশ করবেন। এত সহজ সব কিছু পাওয়া! সাধনা লাগে। যুবক বয়সে কি করেছেন? চিন্তা করুন। আমি নিজেও তো কম করিনি। এখন আর করিনা করতে চাইও না। আল্লাহ মাফ করবেন। মাফ চাই। আস্তাগফিরুল্লাহ হাল্লাযি লা ইলাহা ইল্লাহুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুমু ওয়াতুবু ইলাইহি অর্থাৎ আমি সেই আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি যিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব, অবিনশ্বর এবং আমি তাঁর কাছে তওবা করছি। দোয়া বেশী বেশী করে পড়া উচিৎ। আল্লাহ হয়তো বা ক্ষমা করে দিতে পারেন। কারন তিনি তো রাহমানুর রহিম। এসব না করে সারাক্ষন যদি ফেইসবুকে লাইক বাড়ানোর জন্য দুনিয়ার যত আজগুবি সংবাদ শেয়ার করেন তাহলে তো চলবেনা। এমনিতেই পুরুষ মহিলারা সারাক্ষন ফেইসবুক নিয়ে ব্যস্ত। দিনে রাতে শুধু ছবি আপলোড করতে থাকে। কে কার থেকে কত নাম করতে পারে। নাম করা কি এত সহজ? সব কিছুতেই সময় লাগে। বাচ্চা হতে হলে দশমাস দশ দিন সময় লাগে। কাল সাংবাদিকতায় ঢুকে পরশুদিন যদি চান আপনি ডেভিড ফ্রস্ট, লেরি কিং, জেরেমি প্যক্সম্যান, পিয়ারস মরগান হয়ে যাবেন, তা তো হয়না। আপনি যদি অস্থির হয়ে যান সারাহ গিলভার্টের ভ্যাকসিনের কখা লিড নিউজ করে ফেলতে তা তো হবেনা। নাম করতে হলেও আল্লাহর ঈশারা লাগে। আল্লাহর হুকুম ছাড়া কিছুই হবেনা। এত তাড়াহুড়ার দরকার কি? কোথায় সেদিন সাইনবোর্ড দেখেছি বাংলাদেশের মত ধীরে চলুন সামনেকরোনা

করোনা ভাইরাস এটি তো মহামারি। এটি আসতে তো সময় লেগেছে।  রকম মহামারী এর আগে কবে হয়েছিল – একশত কছর আগে। এখন এসেছে একশত বছর পরে। এই মহামারীকে যদি কেউ কেউ দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসেন তাহলে সেখানে সৃষ্টিকর্তার করার কিছুই নেই। পৃথিবীর কেউই মহামারীর জন্য প্রস্তত ছিলেন না। এটাকে যেমন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসেন নি তেমনি বরিস জনসনও নিয়ে আসেন নি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট মহামান্য ডোনাল্ড ট্রাম্পও দাওয়াত করেন নি করোনা ভাইরাসকে। তবে কথা হচ্ছে সরকারের কিছু প্রিপারেশন থাকে। কারো কোনো প্রিপারেশন নেই। এটার জন্য যে ক্ষমতায় থাকবেন তাকেই এপেক্ট করবে, তাকেই মুল্য দিতে হবে। তবে সারাক্ষন যদি বলতে থাকেন উন্নয়ন উন্নয়ন তাহলে তো হবেনা। বাংলাদেশে উন্নয়নের ধারা হচ্ছেকেউ যদি বেশী কথা বলে তাহলে তাকে মেরে ফেল, তবে উন্নয়ন করো এবং উন্নয়ন করো যা মানুষের চোখে পড়ে। যেমন ফ্লাইওভার করো। মানুষের চোখে পড়বে। গগনচুম্বী অট্রালিকা করো তাহলে মানুষ বলবে দেখছো শেখ হাসিনার সময়ে এসব হয়েছে। আর ভিন্নমত পথের মানুষ যদি বেশী গনতন্ত্র গনতন্ত্র করে তাহলে তাকে সাইজ করে দাও। খুন করো গুম করে ফেলো। আরে বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছে ৪০ বছর বিচার হয়নি বরং খুনীদের বিদেশে বিভিন্ন এম্বেসীতে চাকুরী দিয়ে পুরস্বকৃত করা হয়েছে। খুন গুম সব সময়ই অন্যায়, অন্যায়কে তো মেনে নিতে পারিনা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে কি লাভ হয়েছে? যারা খুন করেছিল ৪০ বছর পরেও বিচার হয়েছে। পিলখানা হত্যাকান্ডের কি বিচার হবেনা? অবশ্যই হবে। আমার জীবদ্দশায় হয়তো না হতে পারে, তবে হবে। সব হত্যার বিচার হবে। সব পাপেরই প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করতে হয়। কথায় বলে না, পীরের বিচার ধীরে ধীরেযদি পীরে বিচার করে

সে যাক, এই করোনার সময়ে পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা যেটি চাচ্ছেন সেটি হলো, সাধারন মানুষ মরে মরুক কিন্তু অর্থনীতি ঠিক থাকলেই হলো। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনা মোকাবেলার চাইতে তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন আগামী তিন বছরের ইকোনমি কি করবেন সেটি নিয়ে। মানুষ বাচানো তো এই মুহুর্তে সবচাইতে বড় কাজ। আমার আগের একটি লেখায় উল্লেখ করেছিলাম বৃটেনের অর্থমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলছে। অর্থমন্ত্রী চান লক ডাউন থেকে বৃটেন বেরিয়ে আসুক, কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী সেটা চান না। কারন লকডাউন থেকে বৃটেন বেরিয়ে আসলে রোগ যদি আরো বেশী ছড়ায় তাহলে সে দায়দায়িত্ব কে নেবে? মানুষ মরলে  দায়িত্ব তো স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপর প্রথমে পড়বে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবী জোরালো হবে। কেউ তো তার পদ হারাতে চায়না। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখের দিকে তাকানো যায়না। নির্বাচন নভেম্বরে। এখন যদি লক্ষ লক্ষ মানুষ মরে তাহলে দায়িত্ব তো ট্রাম্প প্রশাসনের উপর বর্তাবে। মানুষ ভোট দেবেনা। বিনিময়ে ট্রম্প চাচা ফেইল করবেন। তিনি চাননা আগামী নির্বাচনে ফেল করতে। ক্ষমতার স্বাধই আলাদা।

সে যাক, কয়েকদিন বৃটেনের অক্সফোর্ডের সারা গিলবার্টের ভ্যাকসিনের দিকে তাকিয়ে ছিলেন বিশ্বের সব মানুষ এবং বাঙালীরা। ফেইসবুক ইউজাররা যেভাবে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের কথা প্রচার করেছেন তাতে মনে হয়েছে ২৩ এপ্রিল ২০২০ বৃহস্পতিবার সারাহ গিলভার্ট ভ্যাকসিনের কার্যকরিতা ঘোষনাা করবেন এবং শুক্রবার থেকেই সেটি বাজারে পাওয়া যাবে। শনিবার থেকে আমাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে যাবে, আমরা আবারো নাচতে পারবো, গাইতে পারবো। মোট কথা সব কিছু আগের মতো হয়ে যাবে। একটি ভ্যাকসিন বাজারে আসতে নাকি বছরখানেক সময় লাগে। এই বছরখানেক সময় আমরা কি করবো? বিজ্ঞানীদের দিকে তাকিয়ে থাকবো? হ্যাঁ তাকাতেই হবে কোনো উপায় নেই। সারাহ বলেছেন তিনি ৮০ ভাগ আশাবাদী। কাজ করবে ইনশাআল্লাহ। এখন ৮০ ভাগ আমার কেমন জানি সন্দেহ হয়। ঔষধের ক্ষেত্রে ৮০ ভাগ হলে রিস্ক থেকে যায়। ঔষধের ক্ষেত্রে বলতে হবে ‘ঘড়ি কাদের স্যার’র মতো আমরা করোনার চাইতে শক্তিশালী নতুবা হবে না। ‘ঘড়ি কাদের স্যার‘ যেভাবে বলেছেন যদিও তিনি তৎকালীন সময়ে না বুঝে বলেছেন তবু তার কথার মধ্যে একটি আশার আলো আমি দেখতে পেয়েছিলাম। সেখানে স্পিরিট ছিল, সাহস ছিল। কিন্তু সারাহ গিলভার্টের কথার মধ্যে ঘড়ি কাদের স্যারের কথার মতো জোর পাইনা, শক্তি পাইনা, ভরসা পাইনা। অবশ্য ইংরেজরা এভাবেই কথা বলে। সারাহ চেষ্টা করছেন। সারাহ’র জন্য আমার শুভ কামনা থাকলো। আমি চাই সারাহ করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বের করে এই শাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে পৃথিবীর মানুষকে মুক্তি দেবেন। কে সেদিন একজন বলেছিল মেইড ইন চায়নার সব কিছুই এক বছরের বেশী ঠিকেনা। অনেক কিছু নকল বানিয়ে বাজারে ছেড়ে দেয়। কিন্তু করোনা ভাইরাসটি নকল করেনি। এটি জেনুইন। তাই অনেকেরই সন্দেহ এটিতে একটা সমস্যা আছে। এটিতে শুধু চায়না জড়িত নয় আরো অনেকেই পেছন থেকে কলকাটি নেড়েছেন।

যাক, জাফর উল্লাহ চৌধুরী স্যার গনস্বাস্থ্য থেকে একটি কিট বা করোনা টেস্টের যন্ত্র আবিস্কার করেছেন। তাঁকে অভিনন্দন। তিনি গতকাল সেটি সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে বাজারে ছেড়ে দেয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। উদ্বোধনী অনুষ্টানে আমন্ত্রন জানিয়ে ছিলেন সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদেরকে। কিন্তু সেখানে সরকারের কেউই যায়নি। যাবে কিভাবে? একে তো জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্যার হচ্ছেন ম্যাডাম জিয়ার মানুষ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো ম্যাডাম জিয়াকে সহ্য করতে পারেননা। দ্বিতীয়ত এই কিটটির দাম হচ্ছে তিনশত টাকা। চৌধুরী সাহেব ব্যবসা করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্যবসা করবেনা তা তো হয়না। সেখান থেকে ১০ পার্সেন্ট  ইলেভেন পার্সেন্ট তো কোনো এক জায়গায় পাঠিয়ে দেয়ার কথা? এটা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন জাফর উল্লাহ চৌধুরী স্যার। আমি সবিনয় অনুরোধ করবো জাফর উল্লাহ চৌধুরীকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঘুষের টাকাটা গণভবনে পৌছে দিতে। সেখান থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে প্রদান করবেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার ছেলেকে কিছু দেবেন, তার অধ:স্থন কর্মকর্তাকে দেবেন। আরো তো অনেক জায়গা আছে সে সব জায়গায় পৌঁছাতে হবে না? তা ছাড়া রোজা শুরু হয়েছে। রোজার খরচপাতি আছে। সামনে ঈদও। একজন থানার ওসি কি একা ঘুষ খায়? বিভিন্ন জায়গায় দিতে হয়। এসব কি জাফর উল্লাহ চৌধুরী স্যার বুঝেন না? তিনি কি স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ না? তিনি কি মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেন নি? তাঁর তো সব কিছু আমার থেকে আরো বেশী জানার কথা! না জানলে তিনি আমাদের সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিত স্যারের কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন। অথবা বুঝে নিতে পারেন। মুহিত স্যার তো অনেক আগেই ব্যখ্যা দিয়েছেন ঘুষ না স্পিরিট মানি। পুকুর চুরি না সাগর চুরি হচ্ছে। টাকা দিলে তো –  ঘুষ দিলে তো ঝামেলা মিটে যায়। এখানে এত কথাবার্তার দরকার কি? সহজ কথাটি সহজভাবে বুঝে নিলে তো আর সমস্যা হয় না। আর এত আতলামি লেখলেখিরই বা দরকার কি? অনেকে লিখছেন জাফরউল্লাহ চৌধুরী নাকি ভূল দেশে জন্ম নিয়েছেন। দুর এসব কথা শুনতেও কেমন লাগে। ১৮/২০ কোটি মানুষের দেশ। হাজার হাজার জাফর উল্লাহ রাস্তাঘাটে হাটে। যে দেশে শেখ হাসিনা আছেন, যে দেশে ম্যাডাম জিয়া আছেন, তারেক রহমান আছেন, জয় মামা আছেন সে দেশে জাফর উল্লাহ চৌধুরী আর আমি আপনি এসব কুকুর বিড়ালের কি দরকার? শুনতে হয়তো অনেকের খারাপ লাগবে। রাষ্ট্র ক্ষমতায় যারা আছে তারা হলো মাই বাপ আর আমি আপনি হলাম——— প্রিয় জাফর উল্লাহ স্যর, আপনি তাড়াতাড়ি ঘুষ দিয়ে এটি বাংলাদেশ সরকার থেকে ছাড়িয়ে নেন। মুহুর্তে আপনার এটি বিদেশে ভালো ব্যবসা করবে এবং মানুষ উপকৃতও হবে। বিনিময়ে আপনিও টাকা বানাবেন, সরকারও পাবে। আপনারও সমস্যা আছে। একা সব খেয়ে ফেলতে চান কেন? সবাই মিলে মিশে খাওয়া ভালো। আপনি হয়তো ভাবছেন এটি আবিস্কার করে মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে বাচাতে পারবেন। আপনি চাইলে তো শুধু হবে না সরকার চায় কিনা তা তো দেখতে হবে——– সরকার চায় টাকা। টাকা দেবেন না তা তো হবেনা। আমি স্যার টাকায় বিশ্বাসী। কষ্ট পেলে মাফ করবেন। কারন আপনি তো আমার থেকে সব কিছু ভালো জানার কথা। আপনি তো স্যর দেশের সর্বশ্রেষ্ট সন্তান। যুদ্ধ করে যে দেশ যে সমাজ আমাদেরকে আপনারা উপহার দিয়ে যাচ্ছেন আমরা তো স্যার সে পথেই এগুতো থাকবো। স্যার ঘুমের পরে অনেক পথ চলার আছে বাকী, স্যার দেরী করবেন না। সময় নেই। পারলে আজ রাতেই এসব ঘুষের টাকা দিয়ে কাজ উদ্ধার করে ফেলুন। আপনি তো স্যার মঙ্গল গ্রহ থেকে আসেন নি। আপনাকে কি করে বুঝাবো? প্লিজ স্যার আপনি রাজী হয়ে যান।

লেখক:

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: বাংলা স্টেটমেন্ট ডট কম

সাবেক সভাপতি: ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব

সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক: চ্যানেল আই ইউরোপ

ইমেইল: rafcbanglastatement@yahoo.com

২৬ এপ্রিল ২০২০ রবিবার লন্ডন

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ

ukbanglaonline.com