ইউকে রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
হেডলাইন

করনার সাথে আমার বসবাস, বিশ্ববেহায়াদের কবলে বাংলাদেশের করনা আক্রান্ত অসহায় মানুষ! আমার লেখার কৈফিয়ত

◽️রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী◽️

প্রিয় পাঠক ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি প্রথমেই। ক্ষমাই মহত্বের লক্ষন। যে হারে বৃটেনে মানুষ মারা যাচ্ছে তাতে এ যাত্রা বাচবো কি–না জানিনা।করনা ভাইরাস কাউকেই বোধহয় ক্ষমা করবেনা। প্রিন্স চার্লসের সাথে সম্পর্ক গড়ে ফেলেছে মরনব্যাধি করনা। সম্পর্ক করেছে বৃটিশপ্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সাথেও। লন্ডনে মৃতের হার হু হু করে বাড়ছে। লন্ডনের একটি মুসলিম কবরস্থানে যেখানে দিনে একটি দুটিলাশ দাফন করা হতো সেখানে সর্ব্বোচ্চ একদিনে ১৬ টি লাশ দাফন করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা হাজারের উপরেছাড়িয়ে গেছে। অতএব খুবই ভয়ে আছে যদি মরে যাই তাহলে ক্ষমা করে দিবেন।

গত লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর একজন ফোন করে জানতে চেয়েছিলেন কবে লেখক হলাম? কবে সাংবাদিক হলাম? তাকে একটুজানানোর জন্য। বলেছি জানাবো। আমি নাকি লেখালেখির কিছুই জানিনা, বুঝিনা, আমার কোনো অধিকার নেই বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালিক, আর সাহেবজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার সমালোচনা করার। প্রিয় পাঠক সারা জীবনই সাংবাদিকতা করেছি। মাঝে মধ্যেবিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত হলেও সাংবাদিকতা আমাকে পিছু ছাড়েনি। প্রিন্ট মিডিয়া থেকে ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া। শুরু করেছিলাম সেই ছোটবেলায়। ১৯৯১ ইংরেজীতে প্রকাশ করেছিলাম সাপ্তাহিক “সিলেট কথা“। সেই থেকে অফিসিয়েলী যাত্রা শুরু। তখন আমার বয়স ছিল২৩/২৪/ তারপর লন্ডনে বিভিন্ন সাপ্তাহিকে লেখালেখি ১৯৯১ থেকে ২০০০ সাল অনিয়মিত, ২০০১ থেকে ২০০৫ নিয়মিত লিখেছি লন্ডনথেকে প্রকাশিত নতুন দিন পত্রিকায়। ২০০৫/৬ ঢাকা থেকে প্রকাশিত নাঈমুল ইসলাম খান সাহেবের দৈনিক আমাদের সময়ের লন্ডনপ্রতিনিধি। লন্ডন থেকে প্রকাশিত দৈনিক ব্রিট বাংলার সম্পাদক মন্ডলীর সভপাতি ২০০৬–৭। চ্যানেল এস এর ডিরেক্টর অবকমিউনিকেসন্স। চ্যানেল আই ইউরোপের চিফ এক্সিকিউটিভ ২০০৭–২০০৯। চ্যানেল আই ইউরোপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে২০০৯– ২০০১৮ ইংরেজীর আগষ্ট পর্যন্ত কাজ করেছি। ২০০৯ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত লেখালেখি থেকে অনেকটা দুরে ছিলাম। ২০১৫ দিকেসাংবাদিক মনজের চৌধুরী যখন চ্যানেল আই ইউরোপের বার্তা প্রধান হিসেবে যোগ দেন তখন থেকে মনজের প্রায়ই বলতেন বস আপনিলেখা ছেড়ে দিলেন কেন? আপনি লিখুন। মনজের চৌধুরীর সাথে আমার পরিচয় ছিল দৈনিক আমাদের সময় থেকেই। মনজের ছিলেনমৌলভী বাজার প্রতিনিধি আমি ছিলাম লন্ডন প্রতিনিধি। তখন ওয়ান ইলেভেনের সময়। আমি নিয়মিত “ফয়সল চৌধুরী“ লন্ডন থেকেনামে কলাম লিখতাম, দৈনিক আমাদের সময়ে। মনজের চৌধুরীর অব্যাহত চাপের মুখে আবারো লিখতে শুরু করি। তারপর আমারজীবনে আসেন তোফায়েল খান। বাংলা স্টেটমেন্টের প্রধান সম্পাদক। তোফায়েল বললেন চলুন আমরা একটি অনলাইন প্রকাশ করি।যেই কথা সেই কাজ। প্রকাশিত হলো বাংলা স্টেটমেন্ট ডট কম। গত ২/৩ বছর থেকে আমি লিখছি নিয়মিত। মনজের চৌধুরীর পরতোফায়েল খানের অব্যাহত চাপ লিখুন। লিখতে থাকি। লিখতে হলে পরিবেশ লাগে। মানুষের সহযোগিতা লাগে। এখন স্ত্রী যদি বলেকিসের লেখা তাহলে তো সমস্যা। আমার স্ত্রী আনোয়ারা আলী লেখালেখির ব্যপারে কখনো নিরুৎসাহিত করেনি। ইদানিং আরেকজনপ্রিয় মানুষ আমাকে সহযোগিতা করেন, কি করছি? লেখালেখি শেষ কি–না? কি লিখছি তাকে পড়ে শুনাতে হয়। মাঝে মধ্যে ভূল ধরিয়েদেন, এটা এ রকম না হয়ে ও রকম হলে ভালো হয় ইত্যাদি। আমার লেখা প্রকাশিত হলে অনেকেই আমার লেখা নিয়ে সমালোচনাকরেন। কেউ কেউ এ রকমও বলেছেন উনি লিখতে পারেনা কেউ লিখে দেয় বোধহয়। এসবের সাক্ষী আছেন একজন, তিনি লন্ডনেরসাংস্কৃতিক কর্মী সৈয়দা নাজনীন সুলতানা শিখা। শিখাকে একবার এক ডাক্তার আমার ব্যাপারে বিচার দিয়েছিলেন। বিচার দিতে গিয়েবলেছিলেন আমি যে লেখালেখি করি সেটা নাকি তিনি লিখে দেন। শিখার সাথে সম্পর্ক সেই ৯০ এর দশকে। শিখা জানেন আমি যেলিখি। তারপর রাশেদা বকুল আমার ফেইস বুক ফ্রেন্ড লন্ডনে বসাবাস করেন, এক সময় ইতালীতে ছিলেন। বাড়ী নোয়াখালী, তিনিএকদিন আমাকে জিজ্ঞাস করলেন এসব লিখা কি আপনি লিখেন? জিজ্ঞাস করেছিলাম আপনার কি ধারনা? তিনি বললেন আমারধারনা কেউ একজন লিখে দেয়, রাশেদা বকুল অবশ্য একটা কথা বলেছিলেন মাঝে মধ্যে যে সব কথা অথবা শব্ধ আমি ব্যবহার করিসেটি কোথায় পাই। বকুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন। তিনিও লিখতে পারেন তার লেখার হাত রয়েছে, কিন্তু তিনিলিখেননা। তাকে সহজভাবে বলেছিলাম না আমি নিজেই লিখি। তবে লন্ডনে অনেকেই লিখতে জানেননা। লন্ডনের বাংলা পত্রিকায়সম্পাদক লেভেলের অনেক আছেন লিখতে জানেননা। লেখালেখির ব্যপারে তারা উদাসীন, নয়তো পারেননা। লন্ডনে খুব একটা লেখকসাংবাদিক গড়ে উঠেনি। তবে দেশ থেকে কিছু তৃতীয় শ্রেনীর কবিরা লন্ডনে এসেছেন, যাদের যন্ত্রনায় লন্ডনের বাঙালী কমিউনিটিঅতিষ্ট। আমি নিজেও অতিষ্ট। কথা নেই বার্তা নেই কবিতার বই একখানা হাতে ধরিয়ে দেয়। সে যাক এ প্রসঙ্গে আরেকদিন লিখবো। এইহচ্ছে আমার সাংবাদিকতার মুটামুটি ইতিবৃত্ত। টেলিভিশনে টানা ১০ বছর উপস্থাপনার কাজও করেছি “ষ্ট্রেইট ডায়লগ“ নামে যেঅনুষ্টানটি ছিল চ্যানেল আই ইউরোপে সেটির উপস্থাপক ছিলাম। বর্তমানে বাংলা স্টেটমেন্ট ডট কমের সম্পাদক মন্ডলীর সভপাতি আরলেখালেখি করি এই তো আমার জীবন। খুব একটা হাইফাই জীবন লীড করতে পারিনি। সাংবাদিকতার সর্ব্বোচ্চ শিখরে পৌছার চেষ্টাকরেছি, সততার সহিত। সৎভাবে জীবন পরিচালনা করেছি। ধান্ধাবাজী আমার দ্বারা হয়নি। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের কারনেটেলিভিশন বন্ধ হওয়ার পর ব্যক্তিগত দেনা আছে পরিবারের সদস্যদের কাছে এবং বন্ধু বান্ধবাদের কাছে সেটি দিয়ে দিতে পারলে আমিক্লিন একজন মানুষ। মৃত্যুর জন্য সদা সর্বদা প্রস্ততু। কারো সাথে বেঈমানী করিনি। প্রেম করেছি। ভালোবেসেছি নিঃস্বার্থভাবে। কাউকেকষ্ট দিতে পারিনা। তবে লোকজন আমাকে কষ্ট দিয়েছে, ব্যবহার করেছে। যাদেরকে বিশ্বাস করেছি তারাই কষ্ট দিয়েছি বেশী। তারপরওআমার জীবন নিয়ে আমি সন্তুষ্ট “আলহামদুলিল্লাহ“। কারো প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। যারা এ জীবনে আমাকে ঠকিয়েছে আমিতাদেরকে মাফ করে দিয়েছি। যারা ঠকিয়েছে দেখেছি খুব বেশীদুর যেতে পারেনি। এ জীবনে একটি বিষয় খুবই হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিসেটি হচ্ছে “না“ বলা শিখা। ছোট একটি শব্ধ অনেকেই সেটি বলতে পারেনা। “না“ বলা যদি কেউ জানে তাহলে তার কোনো সমস্যানেই। তবে আমি না করতে পারিনা। একজন মহিলা এসে বললো ভাই আপনাকে আমি ভালোবাসি, এখন “না“ করি কিভাবে? স্ত্রী কেবলেছি আমি তো “না“ করতে পারিনা। স্ত্রী বলেছে তাহলে কতজনকে ভালোবাসবে। একটি মাত্র মানুষ তোমি। আমাকে ছাড়া আর কজনকে ভালোবাসবে। কঠিন প্রশ্ন। এড়িয়ে গেছি, এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। আমি সাংবাদিক হিসেবে যে সব কঠিন প্রশ্ন খুব সহজভাবে করতে পারি স্ত্রীরা কিন্তু আরো কঠিনভাবে স্বামীকে প্রশ্ন করতে পারে। অনেক সময় উত্তর দেয়া কঠিন হয়ে পরে স্বামীদের।

সে যাক লেখালেখি করতে গিয়ে আমার মাঝে মধ্যে বানান কিছু ভূল থাকে। সেটির জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। বানান দেখা কিন্তু আমারদায়িত্ব নয়, তা ছাড়া টেকনোলজির যে রেভুলেশন পৃথিবীতে হয়েছে সেখানে অনেক সময় অ এর জায়গায় আ হয়ে যায়। তারপরও মেনেনিচ্ছি লেখা যেহেতু আমার সেহেতু সব দায় আমারই। তবে আমার লেখার কোনো গ্রামাটিকেল মিসটেইক অথবা গঠনমুলক সমালোচনাকেউ করেনি। যে সব পান্ডিতরা আমার ভূল ধরেন তারা বলেন আপনার বানান ভূল। মনে হয় আমি যেন মেট্রিক পরীক্ষা দিতে বসেছি।সাধু ও চলতি ভাষার মিশ্রন দুষনীয়। ঐ যে পরীক্ষার প্রশ্ন পত্রে লিখা থাকতো। গত লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর বেশ কিছু টেলিফোনপেয়েছি অকথ্য ভাষায় গালাগালিরও টেলিফোনে শুনেছি। শুনতে হয়েছে। প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তো বুঝতে পারছেন। আমিলেখালেখি করি কখনো সরকারের ভালো কাজের পক্ষে যায় কখনো খারাপ কাজের বিরুদ্ধে যায়। সেটি যদি অন্যায় হয় তাহলে প্রতিবাদকরার ভাষা আছে। গালাগালি করা তো প্রতিবাদের ভাষা নয়। আমি লিখেছি। লিখিত দলিল। আপনার কাছে যদি আমার লিখা মিথ্যামনে হয় তাহলে আপনিও লিখে প্রতিবাদ করুন। ফালতু কথা ফালতু গালি দেওয়ার তো কোনো মানে হয়না। বানান ভূল হলে যে আমিঅশিক্ষিত আর আপনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যা সাগর তা তো হবে না। বললেই হলো। লেখা আপনার বিরুদ্ধে গেলে আপনি আপনার মানুষদিয়ে ফোন করিয়ে গালি দিবেন, আপনার মানুষ দিয়ে ফেইসবুকে লেখার নীচে দুকলম লিখে দিবেন, লিখবেন অনেক কিছু লিখার ছিললিখলামনা। তা তো হয়না। কেউ কেউ এভাবে লিখে ফয়সল চৌধুরী যা লিখেছেন তা মিথ্যা বানোয়াট। যে লিখে মিথ্যা বানোয়াট তারকাছে তাই মনে হয়। ফয়সল চৌধুরীর জায়গায় দাড়া আগে। তারপর না সমালোচনা করবে। আমি যা লিখি তার এক বিন্ধুও মিথ্যাঅথবা বানানো গল্প নয়। আমার কোনো খায়েশ নেই দেশে গিয়ে নির্বাচন করার। বেশ আগে একবার পীর হাবিববুর রহমানের লেখারউত্তর দিয়েছিলাম পীর হাবিব সাহেব একজনকে দিয়ে আমার লেখার নীচে লিখিয়ে দিলেন ফয়সল চৌধুরীর লেখায় কোনো সাহিত্য নেই।আমি কি সাহিত্য লিখতে বসেছি নাকি? অনেকে বলেন আপনার লেখায় কোনো কাব্য নেই। কিসের কাব্য? আমি তো নজরুলের সেইবিখ্যাত কবিতা স্বরন করে লিখি। নজরুল লিখেছিলেন “অমর কাব্য তোমরা লিখিও বন্ধু যাহারা আছ সুখে,দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়াগিয়াছি তাই যাহা আসে কই মুখে“ অমর কাব্য তো তাহারা লিখিবেন যাহারা দালাল সাংবাদিক, অমর কাব্য তো তাহারা লিখিবেন যাহারাসুখে আছেন। অমর কাব্য তো তাদেরই লিখা উচিৎ যারা লেখার নামে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে তৈল মর্দন করেন। অমর কাব্য তো তাদেরলেখা উচিৎ যারা দিনের শেষে একুশে পদক আশা করেন, স্বাধীনতা পদক আশা করেন, অমর কাব্য তো তাহারা লিখবেন যারাসাংবাদিক হয়ে হালুয়া রুটির ধান্ধা করে বেড়ান। অমর কাব্য তো লিখবেন পীর হাবিব, নঈম নিজাম, সৈয়দ বোরহান কবীর, মোজাম্মেরবাবু, মুন্নী সাহা, ফারজানা রুপা, আমার তো অমর কাব্য লিখার কথা না। আমি তো যা দেখছি যা বুঝতে পারছি তাই লিখছি। আমারকাছে তো যা অন্যায় সেটিই আমি লিখি। আমি তো কাব্য করে বঙ্গবন্ধুর নাম একশত বার নিতে পারবোনা। আমি একবারই বলবোএকবারই লিখবো বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধুই। তিনি স্বাধীনতার এবং বাঙালী জাতীর শ্রষ্টা। সমান সময়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ওসমানী, বাঘাকাদের সিদ্দিকী, জিয়াউর রহমান সাহেব, একে খন্দকার, মেজর জলিল, আসম রব, সিরাজুল আলম খান, চাতীয় চার নেতাসহ সবার অংশ গ্রহনে দেশ স্বাধীন হয়েছে। একা বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেন নাই। সবকিছু বঙ্গবন্ধু করেছেন সেটি বলতে হলে তো আমাকে আওয়ামীলীগের দালাল সাংবাদিক হতে হবে। সব কিছু জিয়াউর রহমান সাহেব করেছেন বলতে হলে তো বিএনপির দালাল হতে হবে। তারেক রহমান সাহেবের দালাল হতে হবে। আমাকে কি দেখতে দালালের মত লাগে নাকি? যে সব সাংবাদিকরা দালালী করে তাদের চেহারার মধ্যে দালাল দালাল ভাব লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া যারা দালালী করে তাদের হয়তো নুন আনতে পান্তা পুরায়। খেতে পারেনি, পড়তে পারেনি, লন্ডনেও এরকম আছে। বাংলাদেশে তো অহরহ। ভাত খেতে পারেনি, সে হয়েছে এখন সাংবাদিক। সে বিএনপি আওয়ামীলীগের কাছ থেকে সুবিধে নিয়ে সে তো বাড়ী গাড়ী ফ্লাট কিনবে। বংশে ফ্লাটে থাকেনি। একবার তারেক রহমান সাহেব লন্ডনেরসাংবাদিকদের সাথে ইফতার করেছিলেন ইফতার পরবর্তী আড্ডায় এক রিপোর্টার সে নাকি দেশে থাকতে বিএনপির বিট করতোএমনভাবে প্রশ্ন করেছিল মনে হয়েছিল সে বিএনপি করে। আমি আরেক সাংবাদিককে ডেকে বলেছিলাম এই ওকে বল বন্ধ করার জন্য।নতুবা লাত্তী মেরে বের করে দে। আর বল সাংবাদিকতা শিখে এসে প্রশ্ন্ করতে। আমি লন্ডনে অনেক প্রেস কনফারেন্সে যাইনা। অনেকমিটিংএ যাইনা। কারন গেলেই তো ঝগড়া বাধবে, যা বাবা তোর চামচামী প্রশ্ন তুই কর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস কনফারেন্স তো দেখি।৭১ টিভির মোজাম্মেল বাবু সাহেব যেভাবে প্রশ্ন করেন নেত্রী বলে তার কর্মচারীরাও সে রকম প্রশ্ন করে। এসব তো ইতিহাসের সাক্ষী হয়েথাকবে না–কি??????

সে যাক করনার সাথে আমার বসবাসের কারন হচ্ছে আমার স্ত্রী লন্ডনে ডাক্তারী করে। জিপি, অনেকেই হয়তো চিনেন জানেন। ডাক্তার আনোয়ারা আলী। করনা শুরু হওয়ার পর ব্যপারটি তেমন গুরুত্ব দেইনি আমি, আরো দশাটা রোগের মতই উড়িয়ে দিয়েছি। বলেছি এগুলো শেষ হয়ে যাবে। স্ত্রীর সাথে তর্ক করেছি। বলেছি কিসের করনা। স্ত্রী যেদিন সব কিছুর জন্য মাফ চাইলো সেদিন বুঝতে পারলাম করনা ভয়ংকর এক ভাইরাসের নাম। স্ত্রী বলেছিল মরনের কথা তো বলতে পারবোনা। কে মরবো কে বাচবো। তবে চলার পথে যা হয়েছেক্ষমা করো। বলেছি ক্ষমা তো আমার চাওয়া দরকার কত অন্যায় করেছি। কত মিথ্যা কথা স্ত্রীর সাথে বলেছি। কষ্ট দিয়েছি। অনেকদিন আমি কাদিনি সেদিন কাদলাম। ছেলে সামনে চলে আসায় আর কাদতে পারলামনা। স্ত্রী বললো বৃটেনে ডাক্তার নার্সদের এখন কঠিনসময়। শুধু বৃটেনে নয় সারা পৃথিবীতে। ইতালীতে ডাক্তার নার্সদের মুখের দিকে তাকানো যায়না। প্রতিদিন সকালে স্ত্রী মাস্ক হাতেগেলাপস পরে কাজে যায়। মাঝে মধ্যে হাসপাতাল থেকে কল আসে সেখানেও যেতে হয়। করনা ভাইরাস যেহেতু চোয়াছে রোগ স্ত্রী যদিকারো কাছ থেকে নিয়ে আসে তাহলে নির্ঘাত মৃত্যু।

প্রিয় পাঠক আমার লেখার কারনে কেউ যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে ক্ষমা প্রার্থী। গত লেখার প্রতিবাদ করতে যেয়ে যে ভদ্রলোক ফোনকরে সাব্রিনা ফ্লোরার পক্ষে কথা বলেছেন তিনি বলতেই পারেন। আমি সাব্রিনা ফ্লোরাকে এ জীবেন দেখিনি। বাংলাদেশে যা হচ্ছে এককথায় রিডিকুলাস। ডাক্তার সরকার সবাইকে আমার কাছে মনে হয়েছে উদাসীন। জনগন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেনা আমার মতই।আমি শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রী এবং সাব্রিনা ফ্লোরার পদত্যাগ দাবী করেছি আমার কাছে কেন যেন মনে হয়েছে তারা তাদের জব ভালোভাবেকরছেননা। জবের মধ্যে অবহেলা রয়েছে। তাদের অবহেলার কারনে যদি লক্ষ লক্ষ লোক মারা যায় তাহলে কষ্ট লাগবে আমার। বৃটেনেযদি বর্ডার, এয়ারপোর্ট বন্ধ করে দিত তাহলে এই করনা এতটা আঘাত হানতে পারতো না। বাংলাদেশ কে নিয়ে ভাবি, ভাবার কোনোকারন নেই। কবি বন্ধু মাসুক ইবনে আনিস লিখেছেন মাইন্ড ইয়োর অউন মিশিন। ইয়া নফসী। জানি বন্ধু তারপরও মনটা মানেনা।বাংলাদেশে না শুধু চোখের সামনে মানুষ মরবে তা তো হয়না। সেদিন ইষ্ট লন্ডনে এক ফার্ম্মেসীতে ঢুকে দেখলাম মাস্ক না পরে কাজকরেছ। অুনুরোধ করেছি মাস্ক পরার জন্য। এখন বাংলাদেশে সাহেবজাদী মাজরাদী না ডেকে তাকে সাহেবজাদীই ডাকতে আমার ভালোলাগে। এই সাহেবজাদী যা বলছেন তা কিন্তু গ্রহনযোগ্য নয়। তিনি বলছেন আজ একজন মরেছে ৭০ এ উপরে বয়স বাংলাদেশেচিকিৎসা নেই। আমার কথা হচ্ছে চিকিৎসার নিশ্চিয়তা চাই। কেউ কেউ বলছেন সরকার খালেদা জিয়াকে করনার ভয়ে মুক্তি দিয়েফেলছে। আরে ভাই এত কথা কেন বলেন, যে করে হউক খালেদা জিয়া মুক্ত হয়েছেন। এটাই বাস্তবতা। ৭০ উর্ধ্ব খালেদা জিয়ার করনায়মৃত্যুবরন করলে তার দায় দায়িত্ব কে নিবে? সরকার মুক্তি দিয়ে নিজেও বেচে গেল বিএনপিকেও বাচিয়ে দিল। তবে বিচার বিভাগ যেমাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আঙ্গুলী হেলেনে চলে সেটি আবারও উলঙ্গভাবে প্রমানিত হলো। সব কিছুই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দখলে।

প্রিয় পাঠক খুবই ভয়ে আছি। আল্লাহকে ডাকি। উপায় নেই গোলাম হোসেন। পরিবারের কেউ এ মুহুর্তে মারা গেলে কি যে অবস্থা হবেবুঝতে পারছেন। আমি মারা গেলে স্ত্রী পুত্র কেউই দেখতে পারবেনা। হে আল্লাহ দুশমনকেও এ মৃত্যু দিওনা মাবুদ। গোসল জানাজাআতœীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবদের অনুপস্থিতে নামাজে জানাজা তো হয়না । এটা আমরা মুসলমানরা কামনা করিনা। মারজাদী আবারব্রিফ করেছেন সাংবাদিকদের। মিথ্যা বলছেন তিনি। মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে আমার সংশয় আছে। তিনি আক্রান্তের কথা বলছেন। কিন্তুমৃত্যুর কথা বলছেননা। আমি বিশ্বাস করিনা তিনি যখন বলেন একজন মারা গেছেন। মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান দিতে হবে। ডাক্তাররাঅনেকেই পালিয়ে যাচ্ছেন কেন? লন্ডনে আমি আমার স্ত্রীকে বলেছি কাজে যাওয়ার দরকার নেই। করনা ভাইরাসে স্ত্রী মারা গেলেছেলেকে কে দেখবে? স্ত্রী বলেছে যে কাজ করি সেটি বন্ধ করতে পারবো–না। এ মুহুর্তে বৃটেনে যারা অবসর প্রাপ্ত ডাক্তার নার্স রয়েছেনতাদেরকেও বলা হয়েছে হাসপাতালে কাজে যাওয়ার জন্য। আগে যেখানে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে সারাক্ষন অভিযোগ দায়ের করতেন রোগীরাএখন শুধু ধন্যবাদ ডক্টর বলেন। ২০১৪/১৫ সালের ঘটনা ইষ্ট লন্ডনে আমার স্ত্রীর সার্জারীর সামনে আমি গাড়ী নিয়ে অপেক্ষা করছি।একজন রোগী বেরিয়ে এসে আমার কাছে অভিযোগ করেছিলেন বলেছিলেন ফয়সল চৌধুরী টেলিভিশনে একটা প্রগ্রাম করো লন্ডনেরজিপিদের বিরুদ্ধে জিজ্ঞাস করেছিলাম কেন? বলেছিলেন রোগ একটার বেশী দুটো শুনতে চায়না। তিনি অভিযোগ করেছিলেন এইসার্জারীতে একটা মোটা বেটী আছে ডাক্তার (মোটা বেটী আমার স্ত্রী) সে মাঝে মধ্যে কথা শুনে তবে সব সময় শুনেনা। সব ডাক্তারই এরকম। একটা প্রগ্রাম করো, আমাকে গেষ্ট হিসেব্ েদাওয়াত দিলে যাবো। বলেছিলাম করবো। কিছুক্ষন পর স্ত্রী বেরিয়ে আসলে আমিঘটনা বলেছিলাম, স্ত্রী বলেছিল সারাদিন রোগী দেখার পর এত কিছু করার পরও মানুষের মন পাইনা। আমি তো আমার সর্বেŸাচ্চচেষ্টা করে যাচ্ছি। সেই ভ্রদলোক দুর থেকে দাড়িয়ে দেখছিলেন মোটা বেটী আমার গাড়ীতে উঠছে। পরে আবার তিনি পেয়েছিলেনআমাকে। বললেন সে যে তোমার স্ত্রী বললেই পারতে। বলেছিলাম বললে তো আপনি অভিযোগ করতেন না। বলেছিলেন ইদানিং ওদেরসার্ভিস কিছুটা ভালো হয়েছে। সেই ভদ্রলোককে পেয়েছিলাম আবার ৫ বছর পর জিজ্ঞাস করেছিলাম কি অবস্থা বলেছিলেন উপরেআল্লাহ নীচে ডাক্তার। এখন আর অভিযোগের সময় নেই। এখন ডাক্তাররাই শেস ভরসা। সেই ডাক্তার হয়ে যদি সেব্রিনা ফ্লোরা মিথ্যাকথা বলেন তখন শুনতে খারাপ লাগে। সরকারের মন্ত্রী যিনি তিনিও নির্বীকার। এ যেন বিশ্ববেহায়াদের কবলে পড়েছেন করনা রোগীরা।

শেষ কথাঃ লেখা শেষ করার আগে একজন ফোন করে বলেছেন “রাত যত গভীর হয় প্রভাত অর্থাৎ সকাল ততই রঙ্গীন হয়। আমাদেরসকাল কি হবে না? অবশ্যই সকাল হবে। সব কিছুরই শেষ আছে। এই করনা ভাইরাসের ও শেষ হবে। আমাদেরকে ধৈর্য্য ধারন করতেহবে। সরকারের নির্দেশিত নিয়মাবলী মেনে চলতে হবে। সেটি ঢাকা এবং লন্ডনে। দু জায়গায়ই। একটি খবর দেখেছি বাংলাদেশে যে সববিদেশীরা রয়েছেন তাদেরকে বিশেষ ফ্লাইটে তাদের দেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভাবলাম তাদের দেশের সরকার কত আন্তরীক। তাদেরমানুষকে বিশেষ ফ্লাইটে নিয়ে যায়, আর আমাদের দেশে গেলে সরকার থেকে শুরু করে তাদের চামচারা জ্ঞান দান করার চেষ্টা করে। ঘৃনাকরে প্রবাসীদের। বলে কাউকে কি দাওয়াত দেয়া হয়েছে বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য?? সব মিলিয়ে মনটা ইদানিং খবুই খারপ থাকে।কোনো কিছুই ভালো লাগেনা। সারা জীবন যা শুনে আসলাম আজ ২০২০ এ এসে দেখি সবই ভূল। করনা সব লন্ড ভন্ড করে দিয়েছে।সেদিন আমার স্ত্রী আমার মন ভালো করার জন্য আমার পছন্দের একটি গান বাজাচ্ছিল, মনে আছে কুখ্যাত ডাকাত এরশাদ সিকদারেরকথা। সে এই গানটি জেলে বসে বেশী গাইতো। আমি তো মরে যাবো—-২। আছসনি কেউ সঙ্গের সাথী সঙ্গেনি কেউ যাবি— মরার সঙ্গেসঙ্গে পরে যাবে কান্নাকাটির ভীড়, সবাই মোরে মাটি দিতে হইবে অস্থীর, আমায় দিবে মাটি ভূল ্ত্রুটি চেয়ে নিবে ক্ষমা, কেউ বা এসেহিসেব নিবে কোন ব্যংকে কি জমা, আমি মরে যাবো—। স্ত্রীকে বললাম গানটি বন্ধ করে দাও। এসব মিথ্যা গান আর শুনতে চাইনা। এইকরনা ভাইরাসের পর আমার কাছে সব কিছুকেই মনে হয় মিথ্যা। মনে মনে চিন্তা করলাম এক সময়তো মরার পর মা বাবার রেখে যাওয়াসম্পদ নিয়ে সন্তানদের কি মারামারি কাটা কাটি শুরু হয়ে যেত। আল্লাহ এসব দেখেননি? আল্লাহ সব দেখেছেন মানুষের স্বার্থপরতা দেখেছেন, আল্লাহ রাগ ধরে রাখতে পারেননি। স্বামী অসুস্থ অথবা স্ত্রী অসুস্থ স্বামী শুরু করে দেয় পরকীয়া। আল্লাহ বলেন নে. যা এখনপরকীয়া প্রেম কর, সম্পদ নিয়ে মারামারি কর। লাশ কবরে রাখার পর পরই তো কোন ব্যংকে কত আছে তা নিয়ে মারামারি করস আর করতে পারবিনা। এখন লাশই কবরে রাখতে পারবিনা। এমন রোগ দেব জন্মের মত তুই আর ফাজলামী করবিনা। ভাবলাম সময়েরব্যবধানে গানের পুরো অর্থই মিথ্যায় পর্যবসিত হয়েছে। হে আল্লাহ তোমি আমাকে ক্ষমা করো। আমি অনেক পাপ করেছি মৌলা। এপাপের শাস্তী আমাদেরকে আর দিওনা। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম খুবই আশা করে বসে আছে। সেদিন আমার এক বন্ধুর মেয়ে জিজ্ঞাসকরছে আমার কি বিয়ে হবে–না? আহারে–কত–স্বপ্ন নিয়ে মেয়েটি তার জীবনের শ্রেষ্ট দিনটি হয়তো বেছে নিয়েছিল। আল্লাহ তুমি রহম করো।

লেখক:

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি, বাংলা স্টেটমেন্ট ডট কম

সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চ্যানেল আই ইউরোপ

সাবেক সভাপতি, ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব

ইমেইল: faisollondon@yahoo.co.uk

২৮ মার্চ শনিবার ২০২০ লন্ডন

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ