
দ্বিত্ব শুভ্রা
এটা কি খুব অপরাধ, চাই এক নিঃশব্দ ঘুম ?
প্রতিদিন নিঃশ্বাসে টান পড়া মুমূর্ষ রোগীর মতন হাপাতে হাপাতে
বিচারকের কার্যালয়ের দিকে ছোটা,
মুহূর্ত বিলম্বে আমি সেই আসামী যার জন্য অপেক্ষা করে
ডজন খানিক কর্কশ কারারক্ষক অথবা সাদা দড়ি ।
পিঠে কোরিওগ্রাফার নিয়ে ধরা পড়া ডলফিন সারাদিন
পারফর্ম করে ছোট লেকে ।
নাক ডুবতে ডুবতে আরো একদিন টিকে গেছি ভেবে
দিনশেষে নিজেকেই দিতে হয় হাতে তালি ।
আমি ক্লান্ত, খুব ক্লান্ত, চাই অতলে ডোবা ঘুম ।
বহুদিন ধরে খেইহীন সমস্ত শরীর নিয়ে ভাসতে ভাসতে ।
নিকট জনের কাছে যাবতীয় জিনিসকে কষ্ট দেয়ার চেয়ে
আমি সেই হালকা শোলা
যাকে বাতিল করা সবচেয়ে সহজ ।
একটা ভারী ঘুম চাই। দীর্ঘশ্বাসের ট্রাক নিয়ে –
পাঁচ টনি ট্রাক, দশ টনি ট্রাক শোঁ শোঁ করে ছুটে আসতে থাকে মগজের ভেতর ।
আমার আকাঙ্খারা যেন অনাকাঙ্খিত ভ্রূণের মতন, জন্ম নিয়েই ভুল করে
আর পচতে থাকে মাথার আস্তাকুড়ে ।
আমি ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠি আর লন্ডভন্ড করতে থাকি ওসবের নাভিরজ্জু ।
পানি গিলি, প্রতিটা দিন যেমনভাবে গিলে খেতে চাই ।
আমার খুব ঘৃণা হয়, প্রবল ঘৃণা হয়, ঘৃণা হতে হতে
আমার হাসিমুখ চেহারা অসহ্য লাগে ।
ঘৃণা হয় পা দুটোকে, যে বাঁচতে হবেই বলে বিকৃত পা নিয়ে ল্যাংচায়,
আঙুল কাঁকড়ার মতো ঘামে ভেজা চ্যাপ্টা চুলের মাঝে বিড়বিড় করে ।
ঘৃণা হয়, যেন ভেসে ওঠা পচা মাছ পরে আছি নদীর চরে ।
প্রবল ঘৃণা নিয়ে উঠি, শত্রুর জন্য এমনকি নিজের জন্যও আমি ঘৃণাভরে
কিছু করতে পারিনা ।
আমার ঘুমই আমি চাইছি, তা সে তুলে দেবে দু’শো গ্রাম ।
আমার ঘুমই চাইছে যেন ক্রুদ্ধ হই জঘন্য সুপারভাইজরের মতো, মুখে দুর্গন্ধ ।
যেন গড়বড় হয়ে যায় চলন্ত বেল্ট, এক হাত কেটে আরেক হাতে কপাল থাপড়াই,
যেন ভুল হয় বড়সড়ো, অন্যের মাথা ছিঁড়ে ফেলি অথবা তুলে দেই নিজেরটাই ।
এও জানা, কোন শুভ কিছু আমার জন্য অপেক্ষা করেনা, আমাকে চলতে হবে এভাবেই
বাথরুমের মপিং ব্রাশ দিয়ে সব গর্তে ঠেলে দেই ।
টয়লেট সারতে সারতে কয়েক জনের মুখ ছেটানো জলে আঁকি,
আমি ঘুমাতে যাই অথবা ঘুমাই এভাবেই ।