
কিছু না লিখলেও চলতো। তবু লিখছি। মাঝেমাঝে আমি লিখি। এই মাঝেমাঝে লিখাগুলোর কোনো অর্থ থাকেনা। অর্থবিহীন এই লিখাগুলোর একটা নাম দেয়া উচিত। নাম খুঁজছি। পাচ্ছিনা। অর্থবিহীন লিখার সারঃনাম কি হতে পারে? এই জগতে সবকিছুরই নাম আছে। সব নামেরই অর্থ আছে। অর্থবিহীন লিখার নাম কি হতে পারে বুঝছিনা। এটা আমার ব্যর্থতা। বিরাট ব্যর্থতা। হ্যাঁ, আজকাল আমি আমার ব্যর্থতা নিয়েও ভাবছি। ভাবনার কর্মফলস্বরূপ আমার জীবনে কি কি ব্যর্থতা আছে তা নিয়ে একটা তালিকা করছি। তালিকার হেডিং এ লিখা: ‘যাহা চাহিয়া মরি’। এই সাধু টাইপ নোমেনক্লেচারের একটা মজার ব্যাপার আছে। আপাতত তা বলতে চাচ্ছিনা। এই তালিকার প্রথমে কি লিখা তাই বলি-
আমি তুমি হরষে, বুজিয়াছি অক্ষিগোলক।
অপেক্ষায় বসিয়া তব: পড়িবে জোড়াপলক?
বিগত চারদিন ধরে একটা টার্কিশ ড্রামা দেখছি। মোট একশো দশ পর্বের ধারাবাহিক ড্রামা। এই ড্রামা দেখাতে আমি খুব মগ্ন। মগ্নতার প্রথম প্রমাণ আমি চোখ বন্ধ করলে দেখতে পাচ্ছি, আমি ইয়াহিয়া এফেন্দি মিউজিলামে বসে আছি। আমার সামনে অতি রূপবতী এক মেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওর চোখে বিষণ্ণতা, হাতে ভায়োলেট কালারের ফুল। একগুচ্ছ ফুল। ফুলগুলো সুন্দর তবে ম্লান। মেয়েটার সৌন্দর্যের কাছে ম্লান। আমি মেয়েটাকে দেখছি আর মনে মনে আওড়াচ্ছি- বিষণ্ণ চোখ দুটো এতো সুন্দর কেনো? দ্বিতীয় প্রমাণ- আমি দিনের অনেকটা সময় উর্দু কথা বলছি। খানা দো। কেয়া মাসয়ালা হ্যাঁ? মেরি মান কি জুস্তুদজু। এইসব বাক্য বলছি। কারণটা সাধারণ। আমি যে টার্কিশ ড্রামা দেখছি সেটা উর্দুতে ডাব করা। আচ্ছা তালিকার কথায় আসি। আমার তালিকার প্রথম ব্যর্থতা হচ্ছে আমি টার্কি ভাষা পারিনা। ভাষাটা শিখতে হবে। (ফুটনোট: সব মুসলিম কান্ট্রির ভাষা শিখে নেয়া উচিত।)
আমাদের বেশিরভাগ অপেক্ষাই ভুল। তালিকার হেডিং এ চোখ বন্ধ করে পলক ফেলবার অপেক্ষার কথা বলা হয়েছে। এই অপেক্ষা ভুল। চাঁদের নিজস্ব আলো নেই। এই জিনিস জানতে মানবজাতির সময় লেগেছে। এটাও অনেক বড় ভুল।
(চোখ বন্ধ করলে আমি যেই রূপবতীকে দেখছি তাকে আমি চিনি। তার নাম বুশরা ইসলাম। তার আরেকটা ডাকনাম আছে। ভালোবাসা। নামটা সুন্দর না? আচ্ছা অর্থবিহীন লেখাটুকুর নাম কি হতে পারে? ভালোবাসা?)