
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। আমি পিজির ( বিএসএমএমইউ) পরিচালককে ধিক্কার জানাই। তিনি সত্য গোপন করেছেন।’
এসময় তিনি অবিলম্বে নতুন নির্বাচনের জন্য সরকারকে নির্দলীয় সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানান।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি দাবি’ শীর্ষক এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের ৫ শতাধিক নেতাকর্মী গুম, ১ লক্ষের ওপর মামলা, ২৬ লাখের বেশি আসামি। এভাবেই আমরা লড়ে চলেছি। আজকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে আসুন। মানুষের মাঝে গিয়ে এদের বিরুদ্ধে সংগঠিত করতে হবে। এজন্য শুধু বিএনপির দিকে তাকিয়ে থাকলে হবেনা। যার যার জায়গা থেকে লড়তে হবে। শুধু সমালোচনা না করে নিজের কাজটুকুও করেন। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে মানুষকে সংগঠিত করাই হচ্ছে মূল কাজ।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের জোট আছে। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরকার গঠনে বিশ্বাসী। সন্ত্রাসী তো তারাই যারা মানুষের ভোটাধিকার লুট করে জোর করে ক্ষমতায় থাকে।’
ফখরুল বলেন, ‘আমরা সকল জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। হলি আর্টিজান মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আসলে যখন কথা বলার সুযোগ থাকেনা। সকল দরজা জানালা বন্ধ হয়ে যায়। তখনই জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে। আমাদের প্রশ্ন এই সরকার কি ইচ্ছা করে এসব করতে চায়?’
ফখরুল আরো বলেন, ‘আজকে দেশ স্বাধীনের প্রায় ৫০ বছরে আমরা ক্রান্তিকালে এসে দাঁড়িয়েছি। যে কারণে যে প্রধান দাবিতে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম সেটা হলো নিপীড়নের বিরুদ্ধে। শোষণের বিরুদ্ধে। আজকের ক্ষমতাসীনদের মতোই পাকিস্তানীরা জোর করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছিলো। সে কারণেই আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। আজকে আওয়ামী লীগ কথা কথায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তো মিছিলে গুলি করা নয়, কারো স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া নয়। আজকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিষ্ঠাতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে ভুলে গেছে। জেনারেল এমএজি ওসমানীর নাম নেয়না। তাজউদ্দীন আহমদের নাম নেয়না। আসলে আওয়ামী লীগের মনোভাব হলো জমিদারের মতো। মানে তারা ছাড়া আর কেউ নেই। আওয়ামী লীগ নিজেদেরকে বাংলাদেশের প্রভু মনে করে। তাদের বিরুদ্ধে লড়ার মানে ফ্যাসিবাদ আর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করাটা খুব সহজ নয়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন ঐক্যের সময়। দুঃশাসন ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই সরকার তো সবকিছু ধ্বংস করে ফেলেছে। যদি কোনো শাসক দেয়ালের লিখন পড়ত, মানুষের চোখের ভাষা বুঝতে পারতো তাহলে কোনো সরকার এতো খারাপ হতে পারতোনা! এই সরকার চারদিকে ব্যর্থ।’
তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে সভা সমাবেশ করতে দেয়নি। আর আওয়ামী লীগের ছোটো সংগঠনেরও কতো টাকা খরচ করে আয়োজন। এখন চলছে উৎসব। বছরজুড়ে নাকি উৎসব। কার টাকা এগুলো? জনগণের টাকা।’
আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী, মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল জাগপার আসাদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।