
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসায় সহযোগিতা করছেন না বলে অভিযোগ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
খালেদা জিয়াকে ‘যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না’ বিএনপির এমন অভিযোগের পর সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একে মাহবুবুল হক বলেছেন, হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে গত সাত মাসে খালেদা জিয়ার অবস্থার অবনতি হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএসএমএমইউ’র পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একে মাহবুবুল হক বলেন, গত সাত মাসে খালেদা জিয়ার অবস্থা হয় উন্নতি হয়েছে বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্থিতিশীল রয়েছে।
তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়নি।
খালেদা জিয়া চিকিৎসার ক্ষেত্রে অসহযোগিতা করছে বলেও অভিযোগ করেন মাহবুবুল হক।
তিনি বলেন, হাসপাতালের অধ্যাপকগণ স্বাভাবিক সময়ে গিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা তার সাথে কথা বলার অনুমতি পান না। আমাদের হাসপাতালের অফিস সময় দু’টা পর্যন্ত। প্রায় সময়ই তিনি (খালেদা জিয়া) অনুমতি দেন দেড়টার পর। নির্ধারিত সময়ে তার দেখা পাওয়া যায় না। এমনকি অনেকবার চিকিৎসক সাড়ে চারটা পর্যন্ত অপেক্ষা করে এসেছেন।
আর্থারাইটিসের চিকিৎসার একটি ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য খালেদা জিয়ার সম্মতি না পাওয়ায় আগের নিয়মে চিকিৎসা চালাতে হচ্ছে বলেও দাবি করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একে মাহবুবুল হক।
তিনি বলেন, প্রতিদিন রক্ত পরীক্ষা করা হয় দু’বার আর একদিন পরপর ইনস্যুলিন দেয়া হয়। মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসার কার্যক্রম তদারকি করে।
হাসপাতালের পরিচালক বলেন, একটি কথা উল্লেখ করতে চাই যা আগে বলতে চাইনি। কিন্তু প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতীয়মান হচ্ছে যে বিষয়টি পরিস্কার করা দরকার।
তবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে তোলা এসব অভিযোগ সম্পর্কে বিএনপির পক্ষ থেকে এখনও কোন বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত ১ এপ্রিল এই হাসপাতালে আনা হয়। এরপর থেকে ওই হাসপাতালের একটি কেবিনে অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
২৫ অক্টোবর খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তার বড় বোন সেলিমা ইসলাম দাবি করেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের চরম অবনতি ঘটেছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখন উঠে বসতে পর্যন্ত পারছেন না। কারও সাহায্য ছাড়া বসতে পারে না। তার হাত বেঁকে গেছে, কথা বলতেও তার কষ্ট হচ্ছে। ওজন কমে গেছে। সব কিছু মিলিয়ে তার পঙ্গু হওয়ার মতো অবস্থা হয়ে গেছে।
সেলিমা ইসলাম জানান, জামিন পেলে খালেদা জিয়াকে তারা চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চান। এতে মিসেস জিয়ারও সায় রয়েছে বলে জানান তিনি।
এরপর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন। তিনি সুস্থ অবস্থায় ফিরে আসবেন কি না, তা নিয়েই শঙ্কা দেখা দিয়েছে।