
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : সদ্য ঘোষিত গণফোরামের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়া নিয়ে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। ফলে দলটিতে ভাঙনের সুর বেজে উঠেছে। যার ফলশ্রুতিতে ‘তৃণমূল গণফোরাম’ নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়াও শুরু করেছেন পদ বঞ্চিত একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা। যার অগ্রভাগে রয়েছেন গণফোরামের সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক।
জানা যায়, রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী পুনর্গঠিত ১১১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেছেন। তবে এর মধ্যে কোষাধ্যক্ষ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, সাংস্কৃতি সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদককের পদ ফাঁকা রাখা হয়েছে।
নতুন কমিটিতে দলটির সভাপতি হিসেবে স্বপদে বহাল আছেন ড. কামাল হোসেন। অন্যদিকে মোস্তফা মহসীন মন্টুকে সরিয়ে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে ড. রেজা কিবরিয়াকে। যিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ মুহূর্তে গত বছরের ১৮ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে গণফোরামে যোগ দেন।
আর দীর্ঘদিন ধরে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদকের পদে থাকা মোস্তফা মহসীন মন্টুর জায়গা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির ১ নম্বর সদস্য পদে। তবে দলটির সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিককে কোনো পদে রাখা হয়নি।
এদিকে পদ বঞ্চিত ও কাঙ্খিত পদ না পাওয়া নিয়ে গণফোরামে তৈরি হয়েছে অস্বস্তি। তাই সাবেক সাধারণ সম্পাদকের পদে থাকা মোস্তফা মহসীন মন্টু ও সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক গণফোরামে থাকছেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, ‘তৃণমূল গণফোরাম’ নামে নতুন রাজনৈতিক দল কিংবা অন্য কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন তারা।
এদিকে পুনর্গঠিত কমিটিতে সদস্য করার বিষয়ে জানতে চাইলে গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, বলার কিছু নেই। কারণ আমি দলের জাতীয় কাউন্সিলেও যাইনি এবং আজকের সংবাদ সম্মেলনেও যাইনি।
পুনর্গঠিত কমিটিতে আপনাকে সদস্য করার হয়েছে, আপনি কি এই পদে থাকবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মনে হয় না।
গণফোরামে থাকছেন না, তাহলে কি অন্য রাজনৈতিক দলে যোগ দিচ্ছেন- এই প্রশ্নের প্রেক্ষিতে মন্টু বলেন, সময়ই বলে দেবে।
এদিকে রফিকুল ইসলাম পথিক বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমি নতুন দল গঠনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। এর নাম হবে তৃণমূল গণফোরাম। আশা করি, আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দিতে পারব।
তৃণমূল গণফোরামের সভাপতি কে হবেন এবং গণফোরামের আরো কেউ কি আপনার সঙ্গে আসবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে পথিক বলেন, সভাপতি কে হবেন, সেটা বলা যাবে না। কারণ অনেক সিনিয়র নেতা আছেন।
অপরদিকে দলীয় নির্দেশ অমান্য করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়া গণফোরামের মোকাব্বির খান গত ২৬ এপ্রিল দলের বিশেষ কাউন্সিলে অংশ নিয়েছিলেন। আর মোকাব্বির খানের মঞ্চে বসা নিয়ে দলের কাউন্সিলরদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এজন্য তখন দল ছাড়ার ঘোষণা দেন রফিকুল ইসলাম পথিক। এছাড়া মোকাব্বির খানের জন্য ওই দিন মোস্তফা মহসীন মন্টুও কাউন্সিলে আসেননি বলে দলটির একটি সূত্রে জানা গেছে।
সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ার পর গণফোরাম ও ঐক্যফ্রন্টে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন মোকাব্বির। এই দলেরই আরেক নেতা সুলতান মনসুর শপথ নিয়ে দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন। শপথ নেয়ার কারণে মোকাব্বির খানকেও বহিষ্কার করা হবে বলে মাঝে এমন গুঞ্জন উঠলেও শেষ পর্যন্ত তার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়নি। এরপর মোকাব্বির খানকে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছিল গণফোরাম। তবে পুনর্গঠিত কটিমিতে মোকাব্বির খানকে সভাপতি পরিষদে রাখায় দলের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণফোরামের এক নেতা বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ড. কামাল হোসেন নিজের এবং দলের নীতি বিসর্জন দিয়ে মোকাব্বির খানকে পদ দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে সুলতান মনসুর কি দোষ করেছেন। তাকে কেনো দলে পদ দেওয়া হলো না?
খবর : বাংলাদেশ জর্নাল